কবরস্থানের রাত

কবরস্থানের রাত

মধ্যরাত পেরিয়ে গেছে। আকাশে মেঘ ঘনিয়ে আছে, চাঁদের আলো যেন অদ্ভুতভাবে ফিকে হয়ে গেছে। রাশেদ নামের এক ব্যক্তি কাজ থেকে দেরি করে বাড়ি ফিরছিল। তার পথটা ছিল গ্রাম ঘেঁষা পুরনো এক কবরস্থান দিয়ে। সবাই বলে, গভীর রাতে ওই কবরস্থানের পাশ দিয়ে গেলে অদ্ভুত শব্দ শোনা যায়, কেউ আবার নাকি ছায়ামূর্তিও দেখেছে।

রাশেদ এসব বিশ্বাস করত না। তার মনে হতো—"সবই মানুষের বানানো গল্প।" তাই সে নিশ্চিন্তে হাঁটতে লাগল। কবরস্থানের গেট পেরিয়ে হঠাৎই তার মনে হলো চারপাশ যেন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। কুকুরের ডাক, বাতাসের শব্দ—সবকিছু মিলিয়ে এক ভয়াবহ নীরবতা নেমে এলো।

একটু দূরে হঠাৎ সে দেখতে পেল একটি কবরের পাশে সাদা পোশাকে দাঁড়িয়ে আছে এক মেয়ে। তার লম্বা চুল মুখ ঢেকে রেখেছে। মেয়েটি একদম স্থির, নড়ছে না।

রাশেদ থেমে গেল। ভেবেছিল, হয়তো কেউ গ্রামের মেয়ে। কিন্তু হঠাৎ মেয়েটি ধীরে ধীরে মাথা তুলল। তার মুখে কোনো চোখ-মুখ নেই—কেবল ফাঁকা কালো গহ্বর!

রাশেদের শরীর কেঁপে উঠল। সে দৌড়াতে শুরু করল, কিন্তু মনে হলো তার পা যেন কাদায় ডুবে যাচ্ছে। পিছন ফিরে তাকাতেই সে দেখল—মেয়েটি বাতাসে ভেসে ভেসে তার দিকে আসছে!

হঠাৎ কানে শোনা গেল ফিসফিস করে বলা— “এত রাতে এখানে কেন এলে...? এখন আর ফিরতে পারবে না…”

রাশেদের গলা শুকিয়ে গেল। সে জোরে চিৎকার করে উঠতেই পুরো কবরস্থান ভরে গেল মানুষের কান্নার শব্দে, যেন শত শত অদৃশ্য আত্মা একসাথে কাঁদছে।

এরপর রাশেদকে আর কেউ কখনও গ্রামে দেখতে পায়নি। সকালের আলোয় গ্রামের মানুষ শুধু খুঁজে পেল তার ছেঁড়া জুতোটা, কবরের পাশে পড়ে আছে।

© ভুতের গল্প | কবরস্থানের রাত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ