চোখহীন মেয়ে - ভয়ংকর গল্প

চোখহীন মেয়ে

রাত তখন প্রায় দু’টো বেজে পনেরো। পুরনো গ্রামের শেষ মাথায় একটা ভাঙাচোরা দোতলা বাড়ি। সবাই বলে, ওখানে আগুন লেগে এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছিল—চোখদুটো গলে গিয়েছিল, মুখটাও চিনে রাখা যায় না।

তবু কেমন করে যেন প্রতিদিন রাতে বাড়ির জানালায় আলো জ্বলে উঠে, কেউ একজন হাঁটে ভেতরে... কেউ গেলে দেখে—বাড়িটা পুরো অন্ধকার, কিন্তু একটা মেয়ের হাসির আওয়াজ শোনা যায়, নরম করে— “চাইলে চোখ দে... আমি দেখতে চাই…”

রিফাত, শহর থেকে আসা তরুণ, ওসব কথায় বিশ্বাস করে না। বন্ধুদের বাজি ধরে রাতে ওই বাড়িতে ঢুকল। টর্চ জ্বালিয়ে ওপরে উঠতেই, দেয়ালে পুরনো ফটো—একটা মেয়ের মুখ, চোখের জায়গায় দুইটা পোড়া গর্ত

রিফাত ফিসফিস করে—“এটা নিশ্চয়ই ওর ছবি।” হঠাৎ পিছন থেকে ঠান্ডা বাতাস বইল, টর্চ নিভে গেল। অন্ধকারে সে শুনল— “তুই আমায় দেখলি... এবার আমাকেও দেখতে দে…”

রিফাত টর্চ আবার জ্বালাতে গেল—আলো জ্বলতেই দেখল, সামনেই দাঁড়িয়ে একটা মেয়ে, সাদা পোশাকে ভেজা চুল মুখের উপর ঝুলে আছে। চোখদুটো নেই—শুধু রক্ত গড়াচ্ছে গালে বেয়ে। তার মুখে হালকা হাসি।

সে ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে বলল— “তুই তো চোখে দেখিস… আমায় একটু ধার দে না চোখ?”

রিফাত পিছিয়ে গেল, কিন্তু মেয়েটা তার মুখে হাত দিল। ঠান্ডা, বরফের মতো হাত। তারপর হঠাৎ — অন্ধকার।

পরের দিন সকালে গ্রামের লোকজন দেখে, বাড়ির ভেতর রিফাত পড়ে আছে। তার চোখদুটো নেই। কিন্তু দেয়ালে রক্তে লেখা— “এখন আমিও দেখতে পাই।”

এখনও রাতে কেউ যদি ওই বাড়ির সামনে দিয়ে যায়, জানালায় দেখা যায় দুইটা জ্বলন্ত চোখ তাকিয়ে আছে বাইরে। আর হালকা ফিসফিসানি ভেসে আসে— “চাইলে তুইও দেখতে পারিস…”

👁️‍🩸 ভয়ংকর গল্প: “চোখহীন মেয়ে” | লেখা: Janku & Roks Sobuj

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ