👁️ আয়নার ভেতর থেকে
রাত তখন ২টা ৩৭। শহরের সব আলো নিভে গেছে। শুধু নীরবতা, আর মাঝেমধ্যে একটা করে কুকুরের হাহাকার। তনিমা একা থাকে একটা ভাড়া ফ্ল্যাটে, পুরনো বিল্ডিং, ৪র্থ তলায়। ওর রুমের এক কোণায় একটা বড়ো দাঁড়ানো আয়না — পুরনো, দাগ পড়ে গেছে, কিন্তু ওর প্রিয় জিনিস।
সেদিন অফিস থেকে ফিরে ও ফোনে স্ক্রল করছিল। হঠাৎ মনে হলো… কেউ যেন পেছনে হাঁটছে। ধীরে ধীরে ঘুরে তাকালো — কেউ নেই। কিন্তু চোখটা আয়নার দিকে যেতেই বুক কেঁপে উঠল।
আয়নায় দেখা গেল — তনিমার পেছনে একটা ছায়া দাঁড়িয়ে আছে। চুলে ভেজা পানি পড়ছে, চোখ দুটো সাদা। কিন্তু ঘুরে তাকাতেই পেছনে কিছুই নেই… শুধু ঠান্ডা হাওয়া বইছে ঘরে।
তনিমা ভয় পেয়ে আয়নার সামনে গিয়ে কাপড় দিয়ে মুছে ফেলল। ভাবল আলোয় ছায়া পড়েছে। কিন্তু তখনই ও দেখল—
নিজের প্রতিবিম্বটা নড়ছে না।
ওর শরীর কেঁপে উঠল। তনিমা হাত নাড়ালেও, আয়নার ভেতরের “সে” নড়ছে না— বরং ধীরে ধীরে ঠোঁট খুলে হাসছে।
“তুমি তো এখানে একা না, তনিমা…”
ও চিৎকার করে দরজা খুলে পালাতে গেল। দরজা খুলছে না। পেছন থেকে শব্দ — টক… টক… টক… যেন কেউ কাঁচে নখ ঘষছে। ও ফিরে তাকালো।
আয়নার ভেতর থেকে নিজেরই মুখটা বেরিয়ে আসছে — ঠোঁট কেটে রক্ত ঝরছে, চোখ ফেটে গেছে, আর মুখে এক ফোঁটা হাসি। ওর নিজের প্রতিবিম্ব বলল —
“তুমি বাইরে থাকো, আমি আজ থেকে ভেতরে…”
পরের সকালে প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে ঢুকে দেখে— তনিমা আয়নার সামনে বসে আছে, একদম স্থির। চোখ ফাঁকা, মুখে অদ্ভুত হাসি।
আর আয়নায় দেখা যাচ্ছে— একটা মেয়ে পেছন থেকে ওর দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ছে।
— শেষ —

0 মন্তব্যসমূহ