🕯️ “শেষ বাসের যাত্রী” রাত তখন প্রায় সাড়ে বারোটা। ঢাকা শহরের শেষ লোকাল বাসটা গাবতলী থেকে ছাড়ল। চালক রফিক, হেলপার জাহিদ — আর মাত্র তিনজন যাত্রী। বৃষ্টি পড়ছে টুপটাপ, জানালার কাঁচে অদ্ভুত ধোঁয়া জমে আছে। বাসটা এগিয়ে যাচ্ছে প্রায় ফাঁকা রাস্তায়। একজন বৃদ্ধা উঠলেন মাঝপথে, পরনে সাদা শাড়ি, হাতে কালো ব্যাগ। তিনি নরম গলায় বললেন, > “মিরপুর কবরস্থানে নামবে, বাবা।” রফিক অবাক, কিন্তু কিছু না বলে চলতে লাগল। কিন্তু কবরস্থানের কাছে পৌঁছাতেই বাসটা নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে গেল। ইঞ্জিন স্টার্ট হচ্ছে না, বাতি নিভে গেছে। বৃষ্টি থেমে গেছে হঠাৎ, চারপাশে শুধু নিস্তব্ধতা। বৃদ্ধা উঠে দাঁড়ালেন। ধীরে ধীরে দরজার দিকে গেলেন। রফিক জিজ্ঞেস করল, > “মা, এখানে নামবেন?” বৃদ্ধা ফিরে তাকালেন। তার চোখ নেই — শুধু কালো গহ্বর। ঠোঁট নড়ছে — কিন্তু শব্দ নেই। তারপর হঠাৎ, বাসের সব আলো একসাথে জ্বলে উঠল — আর দেখা গেল বাসের সব সিট ভরা মৃতদেহে। জাহিদ ভয়ে দরজা খুলে দৌড় দিল। রফিকও চিৎকার করে পালাতে গিয়ে পিছনে তাকাল — বৃদ্ধা জানালার পাশে বসে হাসছে, বলছে — > “প্রতিদিন রাত বারোটায় আমরা সবাই ফিরি, আমাদের বাড়ি কবরের ভেতর…” সেই বাস আর কখনো গ্যারেজে ফিরেনি। লোকজন বলে, এখনো কেউ যদি মিরপুর রোডে রাত বারোটার পর দাঁড়ায়, তাহলে দূরে কোথাও দেখা যায় একটা পুরনো বাস, ভিতরে হালকা আলো জ্বলছে— আর জানালার পাশে সেই সাদা শাড়ির বৃদ্ধা তাকিয়ে থাকে…

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ